
রৌমারী উপজেলার ঝুনকিরচর গ্রামে বাকাত আলী গং-এর দীর্ঘ ৮৭ বছর ধরে ভোগদখল করা জমি অবৈধভাবে দখলের পায়তারা করছেন একই গ্রামের মৃত কাজিম উদ্দিনের বংশধর আব্দুল হামিদ— এমন অভিযোগ উঠেছে।
ভূমি আইনের নিয়ম অনুযায়ী ক্রয়সূত্রে মালিকানা, রেকর্ড সংশোধন, খারিজ এবং নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেও বাকাত গং সম্প্রতি জবরদখলের হুমকির মুখে পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে— কাজিম উদ্দিনের নাতি আব্দুল হামিদ তাঁর দাদার বহু আগে বিক্রিত জমি অন্যায়ভাবে ভোগদখলের লক্ষ্যে বাকাত গং-এর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন।
জমি হস্তান্তরের ইতিহাস তথ্যমতে, খঞ্জনমারা মৌজার রায়াতি প্রজা কাজিম উদ্দিন আর্থিক অভাবের কারণে ১৩৪৫ সালে ১ একর ৬৫ শতাংশ জমি বাকাত আলীর নিকট বিক্রি করেন। পরবর্তীতে এসএ রেকর্ড তৈরির সময় তিনি নিজ উপস্থিতিতে খতিয়ান নং ৩৬০-এ ৩ একর ১০ শতাংশ জমি দুই পক্ষের মধ্যে সমানভাবে রেকর্ড সম্পন্ন করেন।
একইভাবে এসএ খতিয়ান ৩৬১-এ ৮৩ শতাংশ জমির মধ্যে কাজিম উদ্দিন ১০ গন্ডা, বাকাত আলী ১০ গন্ডা এবং দুখী শেখ ১৪ আনা হিসেবে রেকর্ড চূড়ান্ত করা হয়।
পরবর্তীতে আরএস জরিপেও দুই পক্ষের উপস্থিতিতে আরএস ৬০৬ খতিয়ানে কাজিম উদ্দিন ৬২ পয়েন্ট এবং বাকাত আলী ৩৮ পয়েন্ট ভোগদখল দেখিয়ে মোট ৩ একর ৬ শতাংশ রেকর্ড করা হয়।
এসএ ও আরএস রেকর্ডের পার্থক্যের কারণে ২৯ শতাংশ জমি সরকারিভাবে ১ নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়, যার প্রেক্ষিতে বাকাত গং আদালতে সিভিল মামলা দায়ের করেন।
বাকাত আলীর মৃত্যু হলে তাঁর ৪ পুত্র ও ২ কন্যা ওয়ারিশ হন। পরবর্তীতে ৩ পুত্র ও ১ কন্যার মৃত্যু হলে তাঁদের ওয়ারিশদের সঙ্গে বর্তমানে জীবিত ছোট ছেলে ইমান আলী ও বড় মেয়ে ফেলানী বেগম জমিটি ভোগদখল করে আসছেন। তারা নিয়মিত খারিজ, খাজনা ও হোল্ডিং পরিশোধ করে জমির মালিকানা বজায় রেখেছেন।
উক্ত এসএ ৩৬০ খতিয়ানভুক্ত ১ একর ৬৫ শতাংশ জমি এবং সংশ্লিষ্ট আরএস দাগ নং ২১৭৮, ২০৮১, ২০৮০, ২০৭৯, ২১৭৭, ২০৪২, ২১৮০— এসব দাগের মধ্যে বাকাত গং ২০৭৯,এবং ২১৮০০ দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাকাত গং তাঁদের নিজ নামীয় জমিতে হালচাষ করে ভুট্টা রোপণ করছেন।
অপরদিকে, অভিযোগ রয়েছে—মামুদ আলীর পুত্র হামিদ আলী দাদার বহুআগে বিক্রিত জমি পুনরায় দখল করার উদ্দেশ্যে বাকাত গং-এর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ সৃষ্টি করে আসছেন।
উক্ত জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি বর্তমানে কুড়িগ্রাম আদালতে বিচারাধীন, এবং আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে উভয় পরিবার।