
শীতের আমেজ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে প্রকৃতির চারপাশে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে গ্রামবাংলার সকাল। আর এই শীতের আগমনের সাথে সাথেই টাঙ্গাইলের গ্রামীণ জনপদে শুরু হয়েছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পুরনো ঐতিহ্য।
ভোরের আলো ফোটার আগে কিংবা সূর্যের কোমল রোদ মাটিতে পড়তেই দেখা যায়—গাছিরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে কাজে। হাতে ধারালো দা, পাশে ঝুলছে বাঁশের দোনলা। দক্ষভাবে খেজুর গাছের গায়ে চাঁচ দিয়ে রস ঝরার জায়গা প্রস্তুত করে দিচ্ছেন তারা। গাছের মাথায় বাঁধা রয়েছে কলসি বা মাটির হাঁড়ি—যেখানে টুপটাপ করে জমছে খেজুরের রস।
স্থানীয় গাছি আব্দুর রহমান জানান, “শীত বাড়লে রসের মিষ্টতা আরও বেড়ে যায়। ভোরে ওঠে রস নামিয়ে আনা আর নতুন করে চাঁচ দেওয়া—এই সময়টাই আমাদের সবচেয়ে ব্যস্ততা।”
খেজুরের এই রস থেকে তৈরি হয় সুস্বাদু গুড় ও পাটালি। যা শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, দেশের বিভিন্ন শহরেও যাচ্ছে। এতে এলাকার বহু মানুষের মৌসুমি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়।
স্থানীয় প্রবীণ আবুল কাশেম বলেন,“খেজুরের রস শুধু স্বাদের জন্য নয়, গ্রামবাংলার ইতিহাস আর মাটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি। শীত মানেই রস, রস মানেই বাঙালির আনন্দ।”
শীতের আগমনী বার্তায় গ্রামবাংলায় তাই এখন খেজুর গাছঘেরা মাঠ-পথে ব্যস্ততার চিরচেনা দৃশ্য ফিরে এসেছে।