
সৌদি রিয়ালের বিনিময়ে অনেক টাকা লাভ হবে—এমন লোভ দেখিয়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ব্যবসায়ী মো. বিদ্যুৎ সরকার (৩৮) থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক চক্র। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে টাঙ্গাইল পৌরসভার ল্যাবজোন ক্লিনিক এলাকার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর হতবাক ও আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ সরকার টাঙ্গাইল সদর থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ সরকার জানান, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তার ভূঞাপুর বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক অপরিচিত ফেরিওয়ালা সৌদি রিয়াল দেখিয়ে সেটি চালানো যায় কি না জানতে চান। তিনি জানান, ব্যাংক বা মানি এক্সচেঞ্জ ছাড়া রিয়াল বদলানো সম্ভব নয়। তখন ফেরিওয়ালা দাবি করেন, তার সহকর্মীরা রিয়ালগুলো কুড়িয়ে পেয়েছেন এবং কোথায় ভাঙানো যাবে তা জানেন না।
এ অবস্থায় ফেরিওয়ালা কমদামে রিয়াল বিক্রির প্রস্তাব দিলে বিদ্যুৎ সরকার বিষয়টি যাচাই করতে সৌদি ফেরত খালাত ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করেন। পরে খালাত ভাই বলেন, রিয়াল আসল হলে কিনতে পারো। পরদিন ফেরিওয়ালা ৩০ টাকা দরে রিয়াল বিক্রির কথা বলে। এর পর বিদ্যুৎ সরকার ধার-দেনা করে তিন লাখ টাকা জোগাড় করেন।
বুধবার বিকেলে খালাত ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ল্যাবজোন ক্লিনিকের সামনে পৌঁছালে ফেরিওয়ালা এবং তার সঙ্গে থাকা আরও চার ব্যক্তি তাদের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলার এক পর্যায়ে ফেরিওয়ালা একটি ব্যাগ বিদ্যুৎ সরকারের হাতে তুলে দেন। ব্যাগটি হাতে নিয়েই ফেরিওয়ালা দৌড়ে সটকে পড়েন। সন্দেহ হলে ব্যাগ খুলে দেখা যায়, ভেতরে রিয়ালের পরিবর্তে কাগজ ভরা। এরপর প্রতারকের দেওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ সরকার বলেন, "একজন সচেতন মানুষ হয়েও বিশ্বাস করে ভুল করেছি। তিন লাখ টাকা ধার করে দিয়েছিলাম। এখন আমি নিঃস্ব। এই প্রতারকচক্রকে আইনগত শাস্তির আওতায় আনা না হলে আরও মানুষ প্রতারিত হবে।"
এ ঘটনায় বুধবার রাতে সালাম নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্তভার পেয়েছেন এসআই আবুল বাশার।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল বাশার বলেন, "অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাদীর সঙ্গে এখনও দেখা হয়নি। কিছু তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। পূর্ণ তথ্য না পেলে তদন্ত কঠিন হয়ে যায়।"
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহাম্মেদ বলেন, "অভিযোগটি সম্পর্কে আমি এখনও অবগত নই। প্রতিদিন অনেক অভিযোগ আসে; সবগুলো সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয় না।"