
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) দিপংকর চন্দ্রের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে মিশে দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ করেছেন একজন ভুক্তভোগী । এবিষয়ে গোপাল রায় কর্মকার নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে সুত্রে জানা যায় , আমতা মৌজায় অবস্থিত সাড়ে ৩১ শতাংশ বসতবাড়ির জমি বহু বছর ধরে গোপাল কর্মকার ও তার পরিবারের ভোগদখলে রয়েছে। জমিটির মালিকানা ওয়ারিশ সূত্রে প্রমাণিত এবং নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে বলে অভিযোগকারী দাবি করেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সার্টিফিকেটও সংগ্রহ করেছেন তিনি।
কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই জমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর গোপাল কর্মকার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ধামরাই বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় বালিয়া ইউনিয়নের নায়েব দিপংকর চন্দ্রকে।
গোপাল কর্মকারের অভিযোগ তদন্তে অনুকূল প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নায়েব দিপংকর তার কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি ৫ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কর্মকর্তা মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন ও নামজারি বাতিল করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বাকি টাকা না দেওয়ায় নায়েব দিপংকর চন্দ্র মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে জমিটির নামজারি বাতিল করেন এবং কৃষ্ণ গোপাল কর্মকার ও লিটন সাহার নামে রেকর্ডভুক্তির ব্যবস্থা নেন।
গোপাল কর্মকারের দাবি, এই পুরো প্রক্রিয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত বৈদ্যও জড়িত ছিলেন এবং তারা যৌথভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে প্রভাবশালী মহলের পক্ষে কাজ করেছেন।
ঘটনার পর গোপাল কর্মকার রাজস্ব আদালতে আপিল করেন। কিন্তু দুইবারই তদন্তের দায়িত্ব আবারও একই কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়। ফলে তিনি নিরপেক্ষ তদন্ত পাননি বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমেও সালিশি বৈঠক হয়, যেখানে মৌখিকভাবে গোপাল কর্মকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, জমিটি ভুলক্রমে ‘অর্পিত সম্পত্তি’র তালিকাভুক্ত হয়েছিল, তবে ২০১৩ সালের সংশোধিত আইনের মাধ্যমে তা মুক্ত হয় এবং মূল মালিকদের নামে রেকর্ড হয়। বর্তমান অবস্থায় জমিটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হলেও প্রভাবশালী মহল ও কিছু ভূমি কর্মকর্তা যোগসাজশে এটি দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গোপাল কর্মকার দাবি করেন, এই ঘটনার পক্ষে তার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে বালিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী দিপংকর চন্দ্র জানান, অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।