
– আবুজর গিফারী
এক সময় এই ফিলিস্তিন অঞ্চলটি অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। অর্থাৎ ওসমানীয় দের কাছ থেকে হাতছাড়া হওয়ার পর এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বৃটেনের হাতে চলে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ফিলিস্তিন অংশটি তখন ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে ফিলিস্তিনের ওই অঞ্চলের প্রশাসনিক ক্ষমতাও ব্রিটিশ সরকারের হাতে ছিল।
তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, আর্থার বেলফোর।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, ব্রিটিশ সরকার যখন অটোমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে তখন আরবরা ব্রিটিশদের সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিল।
আর্থার জেমস বেলফোর, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে বৃটেনের কনজারভেটিভ পার্টিতে প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে যোগ দেন। বেল ফোর ছিলেন একজন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, দার্শনিক এবং অভিজাত ব্যক্তি। ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থায় তিনি ছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তি, ধর্ণাঢ্য এবং বুদ্ধিজীবী। স্কটিশ বংশোদ্ভুত, বেলফোর ১৯০২ থেকে ১৯০৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।বেলফোর তার কর্মকান্ডে এই ধারণাটি প্রচার করেছিলেন যে, ব্রিটিশ সরকারের উচিত জায়নবাদ অর্থাৎ ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে নিরঙ্কুশ সমর্থন দেওয়া। জায়নবাদ বা জায়োনিজম হল উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভব হওয়া এক রাজনৈতিক আন্দোলন। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এই আন্দোলনের উদ্ভব হয়। এই ভূখণ্ডকে ইহুদীরা তাদের প্রাচীন ভূমি বলে মনে করে।
তবে অনেকের ধারণা, বেলফোর রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য একটা কৌশলগত কারণে জায়নবাদী প্রকল্পকে সমর্থন করেছিলেন।
রাজনৈতিকভাবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর আর্থার বেলফোর ১৯১৭ সালে এক টুকরো কাগজে লেখা ৬৭ টি শব্দ সম্মিলিত একটা চিঠিতে স্বাক্ষর বিশ্বে এমন এক কঠিন বৈরিতার জন্ম দিয়েছিল যা বর্তমান সময়ে এসেও সমাধা করা সম্ভব হয় নাই। এই মুহূর্তেও গাজা বাসীর রক্ত ঝরছে।
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যেই এই বেলফোর ঘোষনার ১০৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। ৬৭ শব্দের এই নথি ইজরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ পরিষ্কার করে এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসকে চিরতরে বদলে দেয়।