
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ঢাকার আশুলিয়ায় কান্তা বিউটি পার্লারের মালিক মার্জিয়া কান্তাকে (২৬) তার স্বামী কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল কক্ষে গলা টিপে হত্যার ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মামুনকে আটক করেছে রৌমারী থানা পুলিশ। গত ২৬ জুন বুধবার সহকারী পুলিশ সুপার মমিনুল ইসলাম ও রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ হিল জামান ও মুশাহেদ খান পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রৌমারী থানা, কুড়িগ্রামের নেতৃত্বে রৌমারী থানাধীন ৪ নং রৌমারী ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত রতনপুর এলাকা হইতে এসআই জুয়েল আলী সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সহিত সু-কৌশলে ঝুকিপুর্ন ভাবে নরসিংদী এর বেলাবো থানার এফআইআর নং-৯, ৩১ জানুয়ারী ২০১৯ জিআর নং-৯ ৩১ জানুয়ারী ২০১৯ ধারা-১১ (ক)/৮/৩০-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩, জিআর ৯(১) ১৯, প্রসেস-২১৫/২৪ (কুড়িগ্রাম) সংক্রান্ত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ সাজাপ্রাপ্ত দন্ডিত আসামী রৌমারী সীমান্ত এলাকা রতনপুর গ্রামের শাহিনুর ইসলাম এর পুত্র মামুন মিয়াকে আটক করে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছেন রৌমারী থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য যে, ঢাকার আশুলিয়ায় কান্তার বিউটি পার্লারের মালিক মার্জিয়া কান্তাকে (২৬) তার স্বামী কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল কক্ষে গলা টিপে হত্যা করে। আর পুলিশি ঝামেলা এড়াতে কান্তার লাশ বস্তায় ভরে সাগরে ভাসিয়ে দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ।
কান্তা হত্যার প্রায় দুই বছর পর পিবিআইয়ের তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। স্বামী ও তার এক সহযোগী কান্তাকে নিয়ে ওই হোটেলে পর্যটক হিসেবে ওঠার পর কোন এক সময় তাকে হত্যা করে পলিথিনে লাশ মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে দুই খুনি পালিয়ে যায়। এরপর হোটেল কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তারা ঝামেলা এড়াতে রাতের অন্ধকারে কান্তার লাশ বস্তায় ভরে মোটর সাইকেলের পেছনে তুলে নিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। এভাবে ঘটনাটি আবাসিক হোটেল কর্তৃপক্ষের ধামাচাপা দেবার অপচেষ্টা এবং খুনিরা এতদিন ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেও পিবিআইয়ের তদন্তে বিস্তারিত বেরিয়ে এসেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নরসিংদী জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইন্সপেক্টর মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, বেলাবো থানার নরসিংদী জেলার সোহরাব হোসেন রতনের মেয়ে মার্জিয়া আক্তার কান্তা ঢাকার আশুলিয়ায় বিউটি পার্লারের ব্যবসা করতেন। সেখানে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীর শহিদুল ইসলাম সাগরের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে দুই লাখ টাকার কাবিননামায় তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর মার্জিয়া কান্তা জানতে পারেন তার স্বামী শহিদুল ইসলাম সাগরের আরও এক স্ত্রী রয়েছে। বিষয়টি গোপন করে তাকে বিয়ে করায় সহজে মেনে নিতে পারছিলেন না কান্তা। এ নিয়ে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্বামী শহিদুল ইসলাম সাগরকে প্রতারক লম্পট হিসেবে তুলে ধরাই কাল হয় কান্তার জীবনে।
এ ঘটনায় কৌশলের আশ্রয় নেন স্বামী শহিদুল ইসলাম সাগর। ভালবাসার অভিনয় করে ভারতে বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা বলে দ্বিতীয় স্ত্রী মার্জিয়া কান্তার মন জয়ের চেষ্টা করে সফলও হন স্বামী সাগর।
এরপর ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আশুলিয়া থেকে স্বামী-স্ত্রী প্রথমে শরীয়তপুরে আবাসিক হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনালে এসে রাত কাটান। সেখানে স্বামী শহিদুলের মামাতো ভাই মামুন এসে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। এর পরদিন তারা শরীয়তপুর থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশে এসে আবাসিক হোটেল আল-মদিনার বি-১ নং কক্ষে ওঠেন। কোনো এক সময় কান্তাকে গলা টিপে হত্যা করে পলিথিনে লাশ মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে তারা দুজন পালিয়ে যান।