খুলনা বিভাগে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রয়োজনের তুলনায় ৩ থেকে ৪ লক্ষর অধিক পশু প্রস্তুত করেছে বিভাগের খামারী ব্যবসায়ীরা। এদিকে বিভাগের ১০ জেলার সকল গবাদি পশু খামারি ব্যবসায়ীরা সকল ধরনের কুরবানির পশু মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে সারা বছর ধরে বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চল থেকে গরু ছাগল সংগ্রহ করে তাদেরকে পরিচর্যা করার লক্ষ্যে অর্থ বিনিয়োগ ও রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে কোরবানী হাটের ক্রেতাদের নজর আকৃষ্ট করার উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে কোরবানীর যোগ্য গবাদি পশু।
এ বিষয়ে বিভাগের প্রাণী ও পশু সম্পদ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তা নাগরিক ভাবনাকে জানিয়েছেন খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় প্রায় ৬ হাজার খামারে প্রস্তুত হয়েছে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ তবে এ বছর কোরবানির জন্য সম্ভাব্য চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৬ টি সে লক্ষ্যে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিভাগে মোট ১২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৬৭ টি কোরবানির জন্য সকল ধরনের পশু প্রস্তুত করা হয়েছে ফলে বিভাগের মানুষের চাহিদা অনুপাতে উদ্বৃত্ত পশু ৩ লাখ ২৮ হাজার ১১ টির অধিক গরু ছাগল লালন পালন করে সাবলম্বী করেছে খামারি ব্যবসায়ীরা। তবে ডুমুরিয়া, চুকনগর, ফুলতলা, সাহাপুর, দিঘলিয়া, তেরখাদা, রুপসা, জাবুসা, আঠারোমাইল, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, চালনা, ফুলতলা এদিকে যশোর, বাগেরহাট,সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা মেহেরপুর,মাগুরা, নড়াইল,সহ অধিকাংশ এলাকার খামারিরা বলেছেন যদি ভারত থেকে চোরা পথে অসাধু ব্যবসায়ীরা গরু আমদানি না করে তাহলে আমরা যে পরিমাণে গবাদি পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করেছি সেই অনুপাতে অন্যন্য বছরের তুলনায় এবছর কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভের পরিমাণ বেশ ভালোই হবে বলে আমরা আশাবাদী। পাশাপাশি খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মুসলমানদের কোরবানির দেওয়ার লক্ষ্যে যে পরিমাণে গরু ছাগলের প্রয়োজন সেই পরিমাণে চাহিদা পূরণ করার পরও রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ গরু ছাগলের চাহিদা মিটাতে পারবো তার কোন সন্দেহ নাই ইনশাল্লাহ।
তবে বিভিন্ন এলাকার খামারিরা আরো বলেছেন সময় মতন গরুর হাট বসতে দেওয়া এবং হাসিল ও কোরবানির পশুর হাট ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটি ইজারাপদ্ধতি এবং ব্যাপারীদের থাকা সহ সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রশাসনিক সহযোগিতা জোরদার করে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্তৃক চাঁদাবাজি উটকো ঝামেলা জালনোট সনাক্তকারীকরণ মেশিন সমগ্র হাট সি,সি ক্যামেরা আওতাভুক্ত রাখার ক্ষেত্রে হাট পরিচালনা কমিটি ও প্রশাসনের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কারণ প্রতিবছরই কোরবানি পশুর হাটে কোনো না কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রীতিকর উটকো ঝামেলা ঘটে তাতে করে বেপারীদের ক্ষয়ক্ষতি হয় টাকা ছিনতাই হয়।
স্থানীয় চাঁদাবাজ মলম পার্টি এরাও যেন বেপারীদের জন্য গোদের ওপর বিষফোঁড়ার রূপ ধারণ করে।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা সাহাপুর এলাকার খামার মালিক মোসলেম উদ্দিন নাগরিক ভাবনাকে বলেন বছরে মুসলমানদের অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা আর এই ঈদুল আযহার রয়েছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য পশু কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে। যে যার সমর্থ্য অনুযায়ী পরম করুনাময় আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সমষ্টিগত হোক আর ব্যক্তি কেন্দ্রিক হোক যেকোনো উপায়ে একটি পশু কোরবানি দিয়ে থাকে আর সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু মানুষদের সারা বছরের কষ্টার্জিত সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী কাঙ্খিত পশু কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্রেতারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন হাটগ্রাম মহল্লায় ঘুরে গরু ছাগল দেখতে থাকে অবশেষে তাদের পছন্দ মতন একটি পশু দরদামে বনিবনার মাধ্যমে কিনে ঈদের দিন কোরবানি দিয়ে সেই পশুর মাংস গরীব দুঃখীদের মাঝে বিতরণ ও নিজেরা তার কিছু অংশ ভোগ করে থাকে আর সে লক্ষ্যে আমরা খামারি ব্যবসায়ীরা নিজেদের অর্থ ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লাভের বিনিময়ে ঋণকর্য নিয়ে গরু ছাগল মোটা তাজা করে ক্রেতাদের নজর আকৃষ্ট করার আপ্রাণ চেষ্টা করি। তারপর আবার যদি শেষ মুহূর্তে সরকারের ইন্দনে দেশের অসাধু পয়সাওয়ালা মালিকরা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে চোরা পথে গরু আমদানি করে বাজার সয়লাব করে তখন আমাদের সারা বছরের পরিশ্রম করা গরু ছাগলের মূল্য রাতারাতি অর্ধেকে নেমে আসে তখন আমাদের হাই হুতাস করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না।
তবে এ ব্যাপারে প্রতি বছর সরকারের পক্ষ থেকে ইন্ডিয়ান গরু আমদানির ক্ষেত্রে কঠোরভাবে বিধি-নিষেধ আরোপ করলেও শেষ পর্যন্ত তা দেশের কতিপয় আমলাদের দাপটে সরকার তার ওয়াদা রক্ষা করতে পারে না আর সেটাই হয়েছে আমাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তা। এদিকে আবার খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরাফিন এক বিজ্ঞপ্তিতে কোরবানী পশুর হাট বসার ক্ষেত্রে কিছু স্থানভেদ বিভেদ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বলেছেন যত্রতত্র এবং চলমান রাস্তা বন্ধ করে পশুর হাট বসতে দেওয়া যাবে না তবে সরকারের পক্ষ থেকে যে সকল জায়গায় পশুর হাটের স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হবে কেবলমাত্র সে সকল স্থানে হাট বসতে পারবে এবং নির্ধারিত সময়ে হাট শেষে ঈদের পরের দিন যথাযথ ভাবে পয়নিষ্কাশন কর্মী দ্বারা হাট এলাকার পশুর বর্জ্য খড়কুটো ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে যাতে করে এলাকাবাসীর পরবর্তীতে কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয়।